বাগেরহাট জেলার জনসংখ্যা বিষয়ক তথ্য

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় বাগেরহাট জেলার জনসংখ্যা বিষয়ক তথ্য। বাগেরহাট জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক জেলা, যা খুলনা বিভাগের অন্তর্গত। সমৃদ্ধ ইতিহাস, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য এবং প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এ জেলা একসময় যশোর ও খুলনার প্রশাসনিক কাঠামোর অংশ হলেও ১৯৮৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পূর্ণাঙ্গ জেলা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।

বাগেরহাট জেলার জনসংখ্যা বিষয়ক তথ্য

বাগেরহাট জেলা সম্পর্কে প্রাথমিক তথ্য

  • অবস্থান: ২২°৩২’ থেকে ২২°৫৬’ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৩২’ থেকে ৮৯°৪৮’ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে
  • সীমানা:
    • উত্তর: গোপালগঞ্জ ও নড়াইল জেলা
    • দক্ষিণ: বঙ্গোপসাগর
    • পূর্ব: পিরোজপুর ও বরগুনা জেলা
    • পশ্চিম: খুলনা জেলা
  • আয়তন: ৫,৮৮২.১৮ বর্গকিলোমিটার (এর মধ্যে ১,৮৩৪.৭৪ বর্গকিলোমিটার বনাঞ্চল, প্রধানত সুন্দরবন)

 

জনসংখ্যা বিষয়ক তথ্য (২০১১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী)

  • মোট জনসংখ্যা: ১৪,৭৬,০৯০ জন
    • পুরুষ: ৭,৪০,১৩৮ জন
    • মহিলা: ৭,৩৫,৯৫২ জন
  • জনসংখ্যার ঘনত্ব: প্রতি বর্গকিলোমিটারে আনুমানিক ২৫১ জন
  • গ্রামীণ নগর বিভাজন: অধিকাংশ মানুষ গ্রামীণ এলাকায় বসবাস করে, তবে বাগেরহাট সদর, মোংলা ও মোড়েলগঞ্জ পৌর এলাকায় নগরায়ন ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

 

প্রশাসনিক কাঠামো

  • উপজেলা: ০৯টি (বাগেরহাট সদর, ফকিরহাট, মোল্লাহাট, কচুয়া, চিতলমারী, রামপাল, মোংলা, মোড়েলগঞ্জ, শরণখোলা)
  • ইউনিয়ন: ৭৫টি
  • গ্রাম: ১,০৪৭টি
  • মৌজা: ৭২০টি
  • পৌরসভা: ০৩টি (বাগেরহাট, মোংলা পোর্ট, মোড়েলগঞ্জ – যথাক্রমে ক, খ, গ শ্রেণিভুক্ত)

 

ধর্ম ও উপাসনালয়

  • মসজিদ: ২,৫১৪টি
  • মন্দির: ৬৯৪টি
  • গির্জা: ১৮টি
    এছাড়া বাগেরহাটে খান জাহান আলীর মাজার, ষাট গম্বুজ মসজিদসহ একাধিক ঐতিহাসিক ধর্মীয় স্থাপনা রয়েছে, যা স্থানীয় সংস্কৃতির বৈচিত্র্যকে প্রতিফলিত করে।

 

প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক বৈশিষ্ট্য

  • বনাঞ্চল: ১,৮৬৮.৯১ বর্গকিলোমিটার (সুন্দরবন)
  • নদী: ৩২টি
  • খাল: ৫৪৭টি
  • বিল: ৩২টি
  • সমুদ্রবন্দর: ০১টি (মোংলা সমুদ্রবন্দর)
  • ইপিজেড: ০১টি (মোংলা ইপিজেড)

বাগেরহাটের জনসংখ্যার উল্লেখযোগ্য অংশ কৃষি, মৎস্য আহরণ, বনজ সম্পদ সংগ্রহ, পশুপালন ও ক্ষুদ্র শিল্পে নিয়োজিত।

বাগেরহাট জেলার জনসংখ্যা ও ভৌগোলিক তথ্য স্থানীয় মানুষের জীবনধারা, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিকে সরাসরি প্রভাবিত করে। কৃষিনির্ভর সমাজব্যবস্থা, বন ও নদীভিত্তিক অর্থনীতি, এবং ধীরে ধীরে বাড়তে থাকা নগরায়ন মিলে জেলার সামাজিক কাঠামোকে বৈচিত্র্যময় করে তুলেছে। সুন্দরবনের মতো প্রাকৃতিক সম্পদ ও মোংলা বন্দরের মতো অর্থনৈতিক কেন্দ্র ভবিষ্যতে বাগেরহাটকে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম শক্তিশালী জেলায় পরিণত করতে পারে।

১ thought on “বাগেরহাট জেলার জনসংখ্যা বিষয়ক তথ্য”

Leave a Comment